খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

Khulna University of Engineering & Technology

কুয়েটের ইতিহাস

প্রতিষ্ঠা ও রূপান্তর

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস ৷ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১৪ বছর পূর্ণ করলেও এর গোড়াপত্তন হয় আজ থেকে ৫০ বছর আগে ৷ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনা নগরীর কেন্দ্রস্থল থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে খুলনা-যশোর মহাসড়কের পাশে ১০১ একর সমতল ভূমির উপর এক নৈসর্গিক শ্যামল-ছায়ায় ঘেরা সবুজের সমারোহের মাঝে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ।

১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠার অনুমোদনের পর অবকাঠামো তৈরীর পরিকল্পনা নেয়া হয় ৷ তবে স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল সময় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন স্থবির হয়ে পড়ে৷ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অবকাঠামো তৈরীর কাজ সন্তোষজনকভাবে চলতে থাকে ৷ অবশেষে বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ নির্দেশে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ১৯৭৪ সালের ৩ জুন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় তৎকালীন কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম সমন্ধীয় নীতিমালা নির্ধারিত হত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ৷ প্রশাসনিক কর্মকান্ড পরিচালনার ভার ন্যাস্ত ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে ৷ স্থাপনা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৷ শিক্ষক নিয়োগ হতো সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে ৷ কলেজটির সার্বিক পরিচালনার ক্ষেত্রে যথাযথ সমন্বয়ের অভাব ও বিভিন্ন জটিল সমস্যার আবর্তে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য অর্জন ব্যহত হচ্ছিল ৷ শিক্ষকের অভাবে এক শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তিও বন্ধ থাকে ৷ পরবর্তীতে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯৮৬ সালে ১ জুলাই দেশের ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে একসাথে স্বায়ত্বশাসিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করা হয় ৷ যাত্রা গুরু হয় বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব টেকনোলজী (বিআইটি), খুলনার ৷ এটিকে একটি স্বারত্বশাসিত ডিগ্রী প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উন্নীত করা হলেও সীমিত স্বায়ত্বশাসনের কারণে প্রশাসনিক, আর্থিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে সিদ্ধান্তহীনতা ও জটিলতা তৈরী হয় ৷ যে প্রত্যাশা নিয়ে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বিআইটি, খুলনায় উন্নীত করা হয়েছিল তা পূরণ না হওয়ার ব্যর্থতা ও হতাশা ধীরে ধীরে প্রকট হয়ে ওঠে ৷ অতঃপর প্রকৌশল ও প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সাথে সংগতি রেখে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও আধুনিক জ্ঞান চর্চার সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের লক্ষে ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেশের ৪টি বিআইটিকে একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয় ৷ এই প্রতিষ্ঠানটি সৃষ্টির দীর্ঘ ৩৬ বছর পর 'খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়' হিসেবে নব উদ্যমে যাত্রা শুরু করে ৷

খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সময়কাল

১৯৭৪ সালে মাত্র ৯ জন শিক্ষক ও ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির ৷ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী প্রদানের উদ্দেশ্যে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় ৷ শুরুতে ছাত্রী সংখ্যা ছিল মাত্র ১ জন ৷ পরে অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মাইগ্রেশনের ফলে ২ জন ছাত্রীসহ মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩৬ ৷ এর দুই বছর পর থেকে প্রতিটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা ৬০-এ উন্নীত করা হয়, যা অনেক দিন অব্যহত ছিল ৷

তখন ছাত্রাবাসের সংখ্যা ছিল মাত্র ১টি, যা ১নং হোস্টেল নামে পরিচিত ছিল ৷ পরবর্তীতে ছাত্রাবাসটির নামকরণ করা হয় ফজলুল হক হল ৷ শুরুতে প্রতিষ্ঠানটিতে কোন ক্যান্টিন ছিল না ৷ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বয়লার হাউজে অস্থায়ী ভিত্তিতে চালু করা হয় ১টি ক্যান্টিন ৷ অসম্পূর্ণ অবস্থায় বর্তমান স্থাপনায় চালু হয় অডিটরিয়াম ৷ তবে প্রশাসনিক, একাডেমিক, লাইব্রেরী ভবন ও শিক্ষকদের আবাসিক ভবন তৈরীর কাজ মোটামুটি সম্পন্ন হয় ৷ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে কোন পাকা রাস্তা তখনও নির্মিত হয়নি ৷ বর্তমানে খুলনা-যশোর সড়কের সাথে সরাসরি সংযুক্ত যে রাস্তাটি রয়েছে তা তৈরী হয় ১৯৭৮ সালে ৷ শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে শুরু হলেও গবেষণাগারের অপ্রতুলতা ছিল প্রকট ৷ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রদের ব্যবহারিক ক্লাস প্রথম বছর সম্পন্ন করা হয় বুয়েটে এবং দ্বিতীয় বছর হয় তৎকালীন রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যা বর্তমানে রুয়েট ৷ তবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য খুলনার বাইরে কোথাও যেতে হয়নি ৷ শুরুতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কোন কর্মকর্তা ছিল না, তবে ১০ জন ৩য় ও ৩৯ জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিল ৷ এত সীমাবদ্ধতার মাঝেও নিবিড় ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক শুরু থেকে তৈরী হয়, ক্যাম্পাসটি ছিল (উৎসবমুখর এবং শুরু থেকেই বিরাজমান ছিল শিক্ষা-বান্ধব পরিবেশ ৷ সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা বাড়তে থাকে ৷ পরিকল্পনা অনুবায়ী অবকাঠামো তৈরীর কাজ মোটামুটি সম্পন্ন হয় ৷ মোট ৪টি ছাত্রাবাস তৈরী হয়, তবে কোন ছাত্রী নিবাস তৈরী হয়নি ৷ ছাত্রীরা থাকতো ক্যাম্পাসে অবস্থিত স্কুলের তৃতীয় তলায় ৷ এই সময়ে শিক্ষক সংকট এবং উচ ডিগ্রী সম্পন্ন শিক্ষকের অভাব শিক্ষার মান উন্নয়নে একটি বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় ৷

সবার নিরলস প্রচেষ্টায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থাকাকালীন সময়ে, ১৯৭৪-১৯৮৬ পর্যন্ত, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেবট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে যথাক্রমে ৩৩৩, ২৪৬ এবং ১৩৬ জন সর্বমোট ৭১৫ জন প্রকৌশলী বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী অর্জন করেন এবং দেশে-বিদেশে মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন ৷ সেই সময়ে এই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ দায়িত্বে ছিলেন পিডি হিসেবে প্রফেসর ড. এম. এম. আযম (১৯৬৯-১৯৭২) ও প্রফেসর ড. মোঃ শামসুদ্দিন আহমেদ (১৯৭২-১৯৭৩) এবং অধ্যক্ষ হিসাবে প্রফেসর মোঃ হায়দার আজম (১৯৭৩-১৯৭৪), প্রফেসর মোঃ আবুল কালাম আজাদ (১৯৭৪-১৯৭৯ এবং ১৯৮০-১৯৮২) ও প্রফেসর এম.এ. হান্নান (১৯৭৯-১৯৮০ এবং ১৯৮২-১৯৮৬) ।

বিআইটি, খুলনার ১৭ বছর

১৯৮৬ সালে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটি বিআইটি, খুলনায় উন্নীতকরণের ফলে সার্বিকভাবে এর প্রশাসনিক, একাডেমিক এবং আর্থিক ক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি পাল্টে যায় । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি হন দেশের বিআইটিসমূহের ভিজিটর ৷ ইউজিসি'র আদলে প্রতিষ্ঠিত হয় কেন্দীয় নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা কাউন্সিল অব বিআইটি, যার চেয়ারম্যান হন পদাধিকার বলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। কাউন্সিলের কাজ ন্যাস্ত থাকে নির্বাহী প্রধান হিসেবে ভাইস-চেয়ারম্যানের হাতে ৷ প্রতিটি বিআইটি পরিচালনার জন্য থাকে পৃথক পৃথক বোর্ড অব গভর্নরস ৷ স্ব স্ব বিআইটির কার্যক্রম ন্যস্ত করা হয় নির্বাহী প্রধান হিসেবে পরিচালকের উপর, যিনি ভিজিটরের অনুমোদনক্রমে কাউন্সিল কর্তৃক নিয়োগ লাভ করতেন ৷

একাডেমিক কাউন্সিল ব্যতীত প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সতাপতি ছিলেন বোর্ড অব গভর্নরের চেয়ারম্যান। সীমিত স্বায়ত্বশাসন নিয়ে বিআইটিগুলো প্রতিষ্ঠিত হলেও পুরোপরি একাডেমিক স্বাধীনতা অর্জন করে ৷ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের পাশাপাশি মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সসহ ধরনের ডিপ্লোমা ও সাটিফিকেট প্রদানের ক্ষমতা পায় ৷ বিআইটি, খুলনায় প্রকৌশল বিভাগগুলোতে এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ও পিএইচডি কোর্স চালু হয় ১৯৯৪ সালে এবং বিজ্ঞান বিভাগগুলোতে এমফিল ও পিএইচডি কোর্স চালু হয় ২০০০ সালে ৷ তবে এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, এমফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রী প্রদান করা হয় যথাক্রমে ২০০০, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে ৷ এই সময়ে তৎকালীন সরকারের নীতি নির্ধারণের ফলে ৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯৯৯ সালে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু হয় ৷ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরী ও নতুন নতুন বিভাগ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ৷ তৎকালীন সরকারও এই বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী ভূমিকা পালন করে ৷

বিআইটি, খুলনার বিদ্যমান প্রশাসনিক ও একাডেমিক অবকাঠামো অক্ষুন্ন রেখে তা সম্প্রসারণ ও অধিকতর উন্নয়নের জন্য ৭ বছর মেয়াদী ১০১ কোটি টাকার একটি বিশেষ সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্প ২০০০ সালে অনুমোদন লাভ করে ৷ বৃদ্ধি পায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৷ তৈরী হয় নতুন অর্গানোগ্রাম ৷ এই সময়ে সিতিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ১২০ জন ৷ ২০০১ সালে শুরু হয় স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট (আইইএম) বিভাগ এবং স্নাতক পর্যায়ে ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগ ৷ পরে আইইএম বিভাগে ২০০৬ সালে স্নাতক ও ইসিই বিভাগে ২০১১ সালে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কোর্স চালু করা হয় ৷ এই সময়ে প্রত্যেকটি ছাত্রাবাসের নামকরণ করা হয়, যা হলো ফজলুল হক হল, লালন শাহ হল, খানজাহান আলী হল ও ড. এম. এ. রশিদ হল ৷ এছাড়া দুইটি নতুন হল তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয় ৷ ছাত্রীদের আবাসনের জন্য রোকেয়া হলের প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজ ২০০০ সালে সম্পন্ন হয় ৷ নতুন একাডেমিক ভবনের নির্মাণের কাজও শুরু হয়, তবে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ২০০৫ সালে ৷ এই সময়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রশাসনিক ভবন তৃতীয় তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয় এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ৷ ২০০১ সালে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালুর মাধ্যমে ক্যাম্পাসে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয় ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ বছর

২০০৩ সালে বিআইটি, খুলনাকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ফলে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে বিরাজমান শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে সত্যিকার অর্থে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় ৷ মহান জাতীয় সংসদে পাশ করা আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের সহযোগিতা ও সমন্বয়ে চলে এর কার্যক্রম ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ক্ষণে বিআইটি খুলনার পরিচালক, আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যেতে থাকেন ৷ অবশেষে রূপান্তরের ১১ মাস পরে ২৯ জুলাই ২০০৪-এ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রফেসর ড. এহসানুল হক প্রথম ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৷ তিনি ২৭ আগস্ট ২০০৬ পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন ৷ এরপর ২০ জুলাই ২০১০ পর্যন্ত ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ নওশের আলী মোড়ল ৷ বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর ৪ বছর মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২১ জুলাই ২০১০ । প্রথম মেয়াদ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট দ্বিতীয় মেয়াদে ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৷

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রার পর এই প্রতিষ্ঠানের সকলের বিশেষ করে পিক্ষকবৃন্দের সার্বিক সহযোগিতার অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যমান নিয়ম-কানুনগুলো পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপযোগী একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও উন্নয়ন কর্মকান্ডের নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় ৷ পরিবর্তন সূচিত হয় সর্বক্ষেত্রে । এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন একটি অর্গানোগ্রামও তৈরি করা হয়, যা অনুমোদিত হয় ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে ৷ এই অর্গানোগ্রামটিতে ২০১৮-২০১৯ বর্ষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল বৃদ্ধিসহ শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামোর সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনার রোডম্যাপ অনুমোদিত হয় ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর অনুষদ ও ইনষ্টিটিউট সৃষ্টি হয়, নতুন নতুন বিভাগ খোলা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরী করা হয়। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষদের সংখ্যা ৩ টি, ইনষ্টিটিউট ৩টি এবং বিভাগ ১৮টি ৷ আরও একটি অনুষদ এবং ৪টি বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে ৷ বর্তমানে বিদ্যমান অনুষদগুলো হলো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং খোলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ৷ ২০০৭ সালে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এনার্জি টেকনোলজী (ইঁটি) যার পরিবর্তীত নাম এনার্জি সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (ইএসই) ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগ যাত্রা শুরু করে ৷ ২০১০ সালে খোলা হয় ইনষ্টিটিউট অব ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজী (আইআইসিটি), ২০১৩ সালে ইনষ্টিটিউট অব ডিজাষ্টার ম্যানেজমেন্ট (আইডিএম) এবং ২০১৬ সালে অব এনভায়রনমেন্ট এন্ড পাওয়ার টেকনোলজী (আইইপিটি) ৷ দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য আইআইসিটি ও আইডিএম এ ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ ও পোষ্ট গ্রাজুয়েট কোর্স চালু করা হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সর স্নাতক পর্যায়ে ডিগ্রী প্রদানের জন্য ১০টি বিভাগ চালু হয় ৷ বিভাগগুলো হলো আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্লানিং (ইউআরপি) ও লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১০ সালে, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১২ সালে, বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কন্সট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট ২০১৩ সালে, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৪ সালে, আর্কিটেকচার, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও এনার্জি সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৬ সালে ৷ ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নামক দুইটি বিভাগ খোলা হবে৷ এছাড়া পরবর্তীতে ওসানোগ্রাফি সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও অ্যারোস্পেস সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার সৃষ্টিশীলতা এবং সৃষ্ট মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণ এবং তা কাজে লাগিয়ে নতুন শিল্প ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপে ২০১৬ সালে গঠিত হয় ইনোভেশন এন্ড ইনোভেটর সেল-দি আইআইসি কুয়েট, যা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম। সম্ভাবনাময় নতুন আঙ্গীকের এ সেলটির উন্নয়নের লক্ষে গত ০৯ আগস্ট ২০১৭ তারিখ বাংলাদেশ সরকারের সিসিইএ কর্তৃক সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে একটি প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন লাভ করে ৷ এই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে প্রথমবারে মত এবছরে গঠিত হয়েছে বিএনসিসি'র একটি যৌথ সেনা প্লাটুন।

নতুন নতুন বিভাগ সৃষ্টির ফলে বর্তমানে প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত নতুন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০৫ এবং ২০১৮-২০১৯ সালে বেড়ে গিয়ে দাড়াবে স্নাতক পর্যায়ে ১৩৮০ এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৩৪৫ জন ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৯২২ জন, যাদের মধ্যে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে যথাক্রমে ৩৮৩২, ১০০৬ ও ৮৪ জন ৷ বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা সন্তোষজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, স্নাতক পর্যায়ে ১৪% ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১৭% ৷

বর্তমানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংখ্যা যথাক্রমে ৩০৪, ১২৯ এবং ২৯৪ জন ৷ ২০১৮-২০১৯ নাগাদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হবে যথাক্রমে ৭৭০০, ৬১৮, ২১৪ এবং ৭২৮ জন ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষণা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এই সময়ে পিএইচডি, এমফিল, এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএসসি, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিইউআরপি ডিগ্রী অর্জন করেছে যথাক্রমে ১৪, ৮৭, ১৩৪, ৬৩, ৫৭৭০ এবং ১২৬ জন ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর ইতোমধ্যে গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রী প্রদানের জন্য ২০০৬ সালে এবং ২০১২ সালে ১ম ও ২য় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ৷

নতুন নতুন বিভাগ ও শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সাথে সাথে অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ৷ এই বিষয়ে শুরু থেকেই সরকার তথা ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশন সহযোগিতা করে আসছে ৷ বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে 'খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো সুবিধাদি উন্নয়ন' নামে ১২২.৯৮ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে । এই প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত বেশ অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে৷ সেন্টাল লাইব্রেরীকে পুরাতন ভবন থেকে নতুন একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর করা হয় ২০০৭ সালে এবং একই সাথে লাইব্রেরী ভবনটি সংস্কার করে সেন্টাল কম্পিউটার সেন্টারে রূপান্তরিত করা হয় ৷ ছাত্রদের আবাসনের জন্য ২০০৬ ও ২০১৩ সালে চালু করা হয় যথাক্রমে অমর একুশে হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং ২০০৭ সালে চালু করা হয় ব্যাচেলর ডরমিটরী এবং পরিকল্পনা ও প্রকৌশল ভবন ৷

ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হয়েছে আধুনিক স্থাপত্য ধারণা সম্বলিত দৃষ্টি নন্দন মেইন গেট, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য "দূর্বার বাংলা", আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ মেডিকেল সেন্টার, গেষ্ট হাউজ কাম ক্লাব ভবন, সিনিয়র শিক্ষকদের আবাসিক ভবন, হাই-ভোল্টেজ ল্যাব৷ সম্পন্ন হয়েছে লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওয়ার্কশপ, রোকেয়া হলের নতুন ব্লক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রশাসনিক ভবনের সম্প্রসারণ, বিজ্ঞান ভবনের গ্যালারীসহ বিভিন্ন হলের সংস্কার ৷ এছাড়া স্টুডেন্ট'স ওয়েলফেয়ার সেন্টার কাম সেন্টাল ক্যাফেটেরিয়া, শহীদ মিনার, ইউআরপি ও আর্কিটেকচার বিভাগের জন্য নতুন ভবন, বিইসিএম বিভাগের জন্য ভবনের সম্প্রসারণ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওয়ার্কশপ, আডিটরিয়াম সংস্কার, ক্যাম্পাসের রাস্তা ও অন্যান্য পুরাতন ভৰন সংস্কারের কাজও চলছে ৷ ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠটির আয়তন বৃদ্ধি করে তা সংস্কার করা হয়েছে এবং এতে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট পিচ তৈরী করা হয়েছে ৷

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চত্বর ও সনাতন ধর্মাবলমীদের জন্য একটি উপাসনালয় মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে ৷ ইনোভেশনকে বাস্তব রূপ দেওয়ার লক্ষে 'ফ্যাবল্যাব' এবং আইসিটি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত আইআইসিটি ও সিএসই বিভাগে ২টি নতুন ল্যাব স্থাপিত হয়েছে৷ 'ওয়েক ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট! স্থাপন এবং 'গ্রীণ ওয়াচম্যান' কার্যক্রমের মাধ্যমে একটা পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হয়েছে৷ বর্তমানে "খুলনা হাইটেক পার্ক এট কুয়েট" এর প্রাথমিক পর্যায়ে 'ইনকিউবেটর কাম ট্রেইনিং সেন্টার" তবন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলছে ৷ একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার লক্ষে ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধি, একাডেমিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৬৯৮.৯৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য এখন পরিকল্পনা কমিশনের বিবেচনাধীন রয়েছে ৷ ক্যাম্পাসে জনতা ব্যাংক ও ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ চালু করা হয়েছে ৷ জনতা ব্যাংক নিজস্ব উদ্যোগে পোস্ট অফিসের পাশে অত্র ক্যাম্পাসে নিজস্ব তবন নির্মাণ করেছে ৷ শিক্ষার্থীদের মননশীলতার ধারাবাহিক বিকাশের লক্ষ্য বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে চলার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ দৃষ্টিনন্দন ও পরিবেশ বান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে ২০১৫ সালে খনন করা হয় একটি নয়নাভিরাম লেক ৷

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্চুরী কমিশনের HEQEP প্রকল্পের আওতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়নে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিন পর্যায়ে মোট ১০টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে আরো ৭টি প্রকল্পের কাজ চলছে ৷ এর ফলশ্রুতিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টাল লাইব্রেরী সম্পূর্ণ Automation System-এ জানুয়ারি ২০১৩ থেকে প্রবেশ করেছে যা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম ৷

এছাড়া একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয় Automation-এর আওতায় এসেছে। তৈরী হয়েছে 'ডিস্টেন্স লার্নিং থিয়েটার" নামে একটি অত্যাধুনিক ভিডিও কনফারেন্স কক্ষ । এসব কিছুর মাধমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্ন 'Digital বাংলাদেশ' গড়ার ক্ষেত্রে কুয়েট কাজ করে চলেছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সার্বিক মূল্যায়নে এবং বিশ্বমানে উন্নীতকরণের লক্ষে বর্তমানে ১১টি বিভাগে সেল্ফ এসেসমেন্ট এর কার্যক্রম চলছে ৷ ২০০৯ সাল থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি শাখায় নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স হয়ে আসছে, যা হলো-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর WasteSafe, মেকানিক্যাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ICMIEE, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ICCESD ও ইলেকট্রিক্যাল ইনফরমেশন ও কমিউনিকেশন প্রযুক্তির উপর EICT৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে ৫টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৷ এছাড়া বিশ্বের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে রয়েছে একাডেমিক ও রিচার্স Collaboration । সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের উদ্যোগে সাত বছর যাবৎ নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে International Journal of Engineering Science.